Wednesday, November 24

bangla soto kobita

এখানে পাবেন ছোট বড় সবার জন্য কবিতা। আপনাদের মতামত পাঠলে উপকৃত হব। click here

Saturday, November 20

চল চল চল

চল চল চল
ঊর্দ্ধ গগনে বাজে মাদল
নিম্নে উতলা ধরণী তল
অরুণ প্রাতের তরুণ দল
চল রে চল রে চল
চল চল চল।।
ঊষার দুয়ারে হানি' আঘাত
আমরা আনিব রাঙা প্রভাত
আমরা টুটাব তিমির রাত
বাঁধার বিন্ধ্যাচল।।
নব নবীনের গাহিয়া গান
সজীব করিব মহাশশ্মান
আমরা দানিব নূতন প্রাণ
বাহুতে নবীন বল।
চলরে নওজোয়ান , শোনরে পাতিয়া কান
মৃত্যু তোরণ দুয়ারে দুয়ারে জীবনের
আহ্বান
ভাঙ্গরে ভাঙ্গ আগল
চল রে চল রে চল
চল চল চল।।

Saturday, November 13

ছিন্নমুকুল

সবচেয়ে যে ছোট পিড়ি খানি
সেখানি আর কেউ রাখেনা পেতে,
ছোটথালায় হয় নাকো ভাতবাড়া
জল ভরে না ছোট্ট গেলাসেতে ।
বাড়ির মধ্যে সবচেয়ে যে ছোট
খাবার বেলা কেউ ডাকে না তাকে ।
সবচেয়ে যে শেষে এসেছিল ,
তারই খাওয়া ঘুচেছে সব আগে ।
সবচেয়ে যে অল্পে ছিল খুশি,
খুশি ছিল ঘেষাঘেষির ঘরে,
সেই গেছে হায়, হাওয়ার
সঙ্গে মিশে,
দিয়ে গেছে জায়গা খালি করে ।
ছেড়ে গেছে পুতুল , পুঁতির মালা,
ছেড়ে গেছে মায়ের কোলের দাবি ।
ভয়ভরা সে ছিল যে সব চেয়ে
সেই খুলেছে আঁধার ঘরের চাবি ।
হারিয়ে গেছে, হারিয়ে গেছে ওরে !
হারিয়ে গেছে ‘বোল’ বলা সেই
বাঁশি
দুধে ধোওয়া কচি সে মুখখানি
আঁচল খুলে হঠাৎ স্রোতের জলে
ভেসে গেছে শিউলী ফুলের রাশি ,
ঢুকেছে হায় শশ্মান ঘরের মাঝে
ঘর ছেড়ে হায় হৃদয় শশ্মানবাসী ।
সবচেয়ে যে ছোট কাপড়গুলি
সেইগুলি কেউ দেয় না মেলে ছাদে,
যে শয্যাটি সবার চেয়ে ছোট,
আজকে সেটি শূন্য পড়ে কাঁদে ।
সবচেয়ে যে শেষে এসেছিল
সেই গিয়েছে সবার আগে সরে ।
ছোট্ট যে জন ছিল রে সবচেয়ে ,
সেই দিয়েছে সকল শূন্য করে ।

Friday, November 12

এত হাসি কোথায় পেলে

এত হাসি কোথায় পেলে
এত কথার খলখলানি
কে দিয়েছে মুখটি ভরে
কোন বা গাঙের কলকলানি |
কে দিয়েছে রঙিন ঠোঁটে
কলমী ফুলের গুলগুলানি |
কে দিয়েছে চলন বলন
কোন সে লতার দোল দুলানী |
কাদের ঘরে রঙিন পুতুল
আদরে যে টইটুবানি |
কে এনেছে বরণ ডালায়
পাটের বনের বউটুবানী |
কাদের পাড়ার ঝামুর ঝুমুর
কাদের আদর গড়গড়ানি
কাদের দেশের কোন সে চাঁদের
জোছনা ফিনিক ফুল ছড়ানি |
তোমায় আদর করতে আমার
মন যে হলো উড়উড়ানি
উড়ে গেলাম সুরে পেলাম
ছড়ার গড়ার গড়গড়ানি |

আয়রে আয় টিয়ে

আয়রে আয় টিয়ে
নায়ে ভর দিয়ে
না নিয়ে গেল বোয়াল মাছে
তাই না দেখে ভোদর নাচে
ওরে ভোদর ফিরে চা
খুকুর নাচন দেখে যা

ঐ দেখা যায় তালগাছ

ঐ দেখা যায় তালগাছ
ঐ আমাদের গা
ঐখানেতে বাস করে
কানা বগীর ছা
অ বগী তুই খাস কি
পান্তা ভাত চাস কি
পান্তা আমি খাই না
পুঁটি মাছ পাই না
একটা যদি পাই
অমনি ধরে
ঘাপুস -ঘুপুস খাই

নোটন নোটন পায়রাগুলো

নোটন নোটন পায়রাগুলো
ঝোটন বেঁধেছে
দুই ধারে দুই রুই -কাতলা
ভেসে উঠেছে
কে দেখেছে কে দেখেছে
দাদা দেখেছে দাদা দেখেছে
দাদার হাতে কলম ছিল
ছুড়ে মেরেছে
ওহ ! বড্ড লেগেছে

আগডুম বাগডুম ঘোড়াডুম সাজে

আগডুম বাগডুম ঘোড়াডুম সাজে
ডাক -ঢোল ঝাঁঝর বাজে
বাজতে বাজতে চলল ঢুলি
ঢুলি গেল কমলাফুলি
কমলাফুলির টিয়েটা
সুর্যি মামার বিয়েটা

হাট্টি মা টিম টিম

হাট্টি মা টিম টিম
তারা মাঠে পাড়ে ডিম
তাদের খাড়া দুটো শিং
তারা হাট্টি মা টিম টিম।

গোল করোনা গোল করোনা

গোল করোনা গোল করোনা
খোকন ঘুমায় খাটে
সেই ঘুমকে কিনতে হবে
নবাব বাড়ির হাটে।
সোনা নয় রূপা নয়
দিলাম মতির মালা
তাইতে খোকন ঘুমিয়ে আছে
ঘর করে উজালা

ওয়ান টু থ্রী

ওয়ান টূ থ্রী
পাইলাম এক্টা বিড়ি
বিড়িতে নাই আগুন
পাইলাম একটা বেগুন
বেগুনে নাই বিচি
পাইলাম একটা কেচি
কেচিতে নাই ধার
পাইলাম এক্টা হার
হারে নাই লকেট
পাইলাম একটা পকেট
পকেটে নাই টাকা
কেম্নে যামু ঢাকা
ঢাকায় নাই ভাত

Thursday, November 11

নিমন্রন

তুমি যাবে ভাই – যাবে মোর সাথে,
আমাদের ছোট গাঁয়,
গাছের ছায়ায় লতায় পাতায়
উদাসী বনের বায় ;
মায়া মমতায় জড়াজড়ি করি
মোর গেহখানি রহিয়াছে ভরি,
মায়ের বুকেতে, বোনের আদরে,
ভাইয়ের স্নেহের ছায়,
তুমি যাবে ভাই – যাবে মোর সাথে,
আমাদের ছোট গাঁয়,
ছোট গাঁওখানি- ছোট নদী চলে,
তারি একপাশ দিয়া,
কালো জল তার
মাজিয়াছে কেবা কাকের চক্ষু
নিয়া ;
ঘাটের কিনারে আছে বাঁধা তরী
পারের খবর টানাটানি করি ;
বিনাসুতি মালা গাথিছে নিতুই
এপার ওপার দিয়া ;
বাঁকা ফাঁদ
পেতে টানিয়া আনিছে দুইটি তটের
হিয়া।
তুমি যাবে ভাই- যাবে মোর সাথে,
ছোট সে কাজল গাঁয়,
গলাগলি ধরি কলা বন; যেন
ঘিরিয়া রয়েছে তায়।
সরু পথ খানি সুতায় বাঁধিয়া
দূর পথিকেরে আনিছে টানিয়া ,
বনের হাওয়ায়, গাছের ছায়ায়,
ধরিয়া রাখিবে তায়,
বুকখানি তার ভরে দেবে বুঝি,
মায়া আর মমতায়!
তুমি যাবে ভাই যাবে মোর সাথে –
নরম ঘাসের পাতে
চম্বন
রাখি অধরখানিতে মেজে লয়ো নিরালাতে।
তেলাকুচা – লতা গলায় পরিয়া
মেঠো ফুলে নিও আঁচল ভরিয়া ,
হেথায় সেথায় ভাব
করো তুমি বুনো পাখিদের সাথে,
তোমার গায়ের
রংখানি তুমি দেখিবে তাদের পাতে।
তুমি যদি যাও আমাদের গাঁয়ে,
তোমারে সঙ্গে করি
নদীর ওপারে চলে যাই
তবে লইয়া ঘাটের তরী।
মাঠের যত না রাখাল ডাকিয়া
তোর সনে দেই মিতালী করিয়া
ঢেলা কুড়িইয়া গড়ি ইমারত
সারা দিনমান ধরি,
সত্যিকারের নগর ভুলিয়া নকল নগর
গড়ি।
তুমি যদি যাও –
দেখিবে সেখানে মটর লতার সনে,
সীম আর সীম – হাত
বাড়াইলে মুঠি ভরে সেই খানে।
তুমি যদি যাও সে – সব কুড়ায়ে
নাড়ার আগুনে পোড়ায়ে পোড়ায়ে ,
খাব আর যত গেঁঢো – চাষীদের
ডাকিয়া নিমন্ত্রণে ,
হাসিয়া হাসিয়া মুঠি মুঠি তাহা বিলাইব
দুইজনে।
তুমি যদি যাও – শালুক কুড়ায়ে,
খুব – খুব বড় করে,
এমন একটি গাঁথিব
মালা যা দেখনি কাহারো করে,
কারেও দেব না, তুমি যদি চাও
আচ্ছা না হয় দিয়ে দেব তাও,
মালাটিরে তুমি রাখিও কিন্তু
শক্ত করিয়া ধরে ,
ও পাড়াব সব দুষ্ট
ছেলেরা নিতে পারে জোর করে;
সন্ধ্যা হইলে ঘরে ফিরে যাব,
মা যদি বকিতে চায়,
মতলব কিছু আঁটির
যাহাতে খুশী তারে করা যায়!
লাল আলোয়ানে ঘুঁটে কুড়াইয়া
বেঁধে নিয়ে যাব মাথায় করিয়া
এত ঘুষ পেয়ে যদি বা তাহার মন
না উঠিতে চায় ,
বলিব – কালিকে মটরের শাক
এনে দেব বহু তায়।
খুব ভোর ক’রে উঠিতে হইবে,
সূয্যি উঠারও আগে,
কারেও ক’বি না, দেখিস্ পায়ের
শব্দে কেহ না জাগে
রেল সড়কের ছোট খাদ ভরে
ডানকিনে মাছ কিলবিল করে;
কাদার বাঁধন গাঁথি মাঝামাঝি জল
সেঁচে আগে ভাগে
সব মাছগুলো কুড়ায়ে আনিব
কাহারো জানার আগে।
ভর দুপুরেতে এক রাশ কাঁদা আর এক
রাশ মাছ ,
কাপড়ে জড়ায়ে ফিরিয়া আসিব আপন
বাড়ির কাছ।
ওরে মুখ – পোড়া ওরে রে বাঁদর।
গালি – ভরা মার অমনি আদর ,
কতদিন আমি শুনি নারে ভাই আমার
মায়ের পাছ ;
যাবি তুই ভাই, আমাদের
গাঁয়ে যেথা ঘন কালো গাছ।
যাবি তুই ভাই, যাবি মোর
সাথে আমাদের ছোট গাঁয়।
ঘন কালো বন – মায়া মমতায়
বেঁধেছে বনের বায়।
গাছের ছায়ায় বনের লতায়
মোর শিশুকাল লুকায়েছে হায়!
আজি সে – সব
সরায়ে সরায়ে খুজিয়া লইব তায়,
যাবি তুই ভাই, যাবি মোর
সাথে আমাদের ছোট গায়।
তোরে নিয়ে যাব আমাদের গাঁয়ে ঘন-
পল্লব তলে
লুকায়ে থাকিস্, খুজে যেন কেহ
পায় না কোনই বলে।
মেঠো কোন ফুল কুড়াইতে যেয়ে,
হারাইয়া যাস্ পথ নাহি পেয়ে;
অলস দেহটি মাটিতে বিছায়ে ঘুমাস
সন্ধ্যা হলে ,
সারা গাঁও আমি খুজিয়া ফিরিব
তোরি নাম বলে বলে।

আয় ছেলেরা আয় মেয়েরা

আয় ছেলেরা আয় মেয়েরা,
ফুল তুলিতে যাই
ফুলের মালা গলায় দিয়ে
মামার বাড়ি যাই।
মামার বাড়ি পদ্মপুকুর
গলায় গলায় জল,
এপার হতে ওপার গিয়ে
নাচে ঢেউয়ের দল।
দিনে সেথায় ঘুমিয়ে থাকে
লাল শালুকের ফুল,
রাতের বেলা চাঁদের সনে
হেসে না পায় কূল।
আম-কাঁঠালের বনের ধারে
মামা-বাড়ির ঘর,
আকাশ হতে জোছনা-কুসুম
ঝরে মাথার ‘পর।
রাতের বেলা জোনাক জ্বলে
বাঁশ-বাগানের ছায়,
শিমুল গাছের শাখায় বসে
ভোরের পাখি গায়।
ঝড়ের দিনে মামার দেশে
আম কুড়াতে সুখ
পাকা জামের শাখায় উঠি
রঙিন করি মুখ।
কাঁদি-ভরা খেজুর গাছে
পাকা খেজুর দোলে
ছেলেমেয়ে, আয় ছুটে যাই
মামার দেশে চলে।

স্বদেশ

এই যে নদী
নদীর জোয়ার
নৌকা সারে সারে,
একলা বসে আপন মনে
বসে নদীর ধারে
এই ছবিটি চেনা।
মনের মধ্যে যখন খুশি
এই ছবিটি আঁকি
এক পাশে তার জারুল গাছে
দু’টি হলুদ পাখি,
এমনি পাওয়া এই ছবিটি
কড়িতে নয় কেনা।
মাঠের পরে মাঠ চলেছে
নেই যেন এর শেষ
নানা কাজের মানুষগুলো
আছে নানান বেশ,
মাঠের মানুষ যায় মাঠে আর
হাটের মানূষ হাটে,
দেখে দেখে একটি ছেলের
সারাটাদিন কাটে।
এই ছেলেটির মুখ
সারাদেশের সব ছেলেদের
মুখেতে টুকটুক।
কে তুমি ভাই,
প্রশ্ন করি যখন,
ভালবাসার শিল্পী আমি,
বলবে হেসে তখন।
এই যে ছবি এমনি আঁকা
ছবির মত দেশ,
দেশের মাটি দেশের মানুষ
নানান রকম বেশ,
বাড়ি বাগান পাখ-পাখালি
সব মিলে এক ছবি,
নেই তুলি নেই রং তবুও
আঁকতে পারি সবই।

কোন দেশে

কোন্ দেশেতে তরুলতা
সকল দেশের চাইতে শ্যামল?
কোন্ দেশেতে চলতে গেলেই
দলতে হয় রে দুর্বা কোমল?
কোথায় ফলে সোনার ফসল,
সোনার কমল ফোটেরে?
সে আমাদের বাংলাদেশ,
আমাদেরই বাংলা রে!
কোথায় ডাকে দোয়েল-শ্যামা
ফিঙে নাচে গাছে গাছে?
কোথায় জলে মরাল চলে,
মরালী তার পাছে পাছে?
বাবুই কোথা বাসা বোনে,
চাতক বারি যাচে রে?
সে আমাদের বাংলাদেশ,
আমাদেরই বাংলা রে!

ট্রেন - শামসুর রাহমান


বাংলা ছোট কবিতা
ঝক ঝক ঝক ট্রেন চলেছে
রাত দুপুরে অই।
ট্রেন চলেছে, ট্রেন চলেছে
ট্রেনের বাড়া কই?
একটু জিরোয়, ফের ছুটে যায়
মাঠ পেরুলেই বন।
পুলের ওপর বাজনা বাজে
ঝন ঝনাঝন ঝন।
দেশ-বিদেশে বেড়ায় ঘুরে
নেই কো ঘোরার শেষ।
ইচ্ছে হলেই বাজায় বাঁশি,
দিন কেটে যায় বেশ।
থামবে হঠাৎ মজার গাড়ি
একটু কেশে খক।
আমায় নিয়ে ছুটবে আবার
ঝক ঝকাঝক ঝক।

আয় বৃষ্টি ঝেঁপে

আয় বৃষ্টি ঝেঁপে
ধান দেব মেপে
লেবুর পাতা , করমচা
যা বৃষ্টি চলে যা।

Thursday, November 4

হাসির কৌতুক

এক ভদ্রলোক বাজারে গিয়ে দোকানদারকে বলল ভাই এক খিলি পান দেন ।
দোকানদারঃ আপনি খয়ের খান?
ভদ্রলোকঃ না আমি জব্বার খান ।
-------------------------------------------------
এক নবাগতকে হুইস্কি খেতে আমন্ত্রন জানালেন বাড়ির মালিক।
- দুটি কারনে আমি হুইস্কি খাব না।
- কারণ দুটো কী জানতে পারি?
- নিশ্চয়ই। প্রথম কারণ হল বাবার মৃত্যুর সময় তার হাত ছুঁয়ে শপথ করেছিলাম কোনো দিন হুইস্কি খাব না।
- দ্বিতীয় কারণ?
- দিত্বীয় কারণ এই মাত্র তিন পেগ খেয়ে এলাম।
----------------------------------------------------
এক তুর্কির ষাঁড় হোজ্জার বাগানের বেড়া ভেঙে ভেতরে ঢুকে তছনছ করে দিয়ে মালিকের কাছে ফিরে গেল।হোজ্জা পুরো ব্যাপারটা লক্ষ করলেন, তারপর একটা বেত নিয়ে বেরিয়ে এসে ষাঁড়টাকে পেটাতে শুরু করলেন।
কোন সাহসে আমার ষাঁড়কে আপনি পেটাচ্ছেন! তুর্কি চেঁচিয়ে বলল।
কিছু মনে করবেন না আপনি, হোজ্জা বললেন, ও পুরো ব্যাপারটা জানে।এটা ওর আর আমার ব্যাপার!
---------------------------------------------------
 একদিন হোজ্জা বাজার থেকে কলিজা কিনে বাসায় যাচ্ছিলেন।এদিকে তাঁর এক বন্ধু তাঁকে কলিজার পাই বানানোর রেসিপি দিয়েছিলেন, যাতে বাসায় গিয়ে কলিজার পাই রান্না করতে পারেন।কিন্তু হঠাৎ একটি বাজপাখি উড়ে এসে কলিজা ছিনিয়ে নিয়ে একেবারে নাগালের বাইরে উড়ে চলে গেল।
বোকা কোথাকার!চেঁচিয়ে হোজ্জা বললেন, কলিজা নিয়ে গেছ ঠিক আছে, কিন্তু প্রস্তুত প্রণালী (রেসিপি )তো আমার কাছে!
-------------------------------------------------
 একবার নাসিরুদ্দিন হোজ্জা অসুস্থ।নিজের গাধাটাকে খাওয়ানোর জন্য বিবিকে বললেন।হোজ্জার বিবি একটু ত্যাদড় টাইপের।সে গাধা কে খাবার দিতে অস্বীকার করল।দুজনের মধ্যে এই নিয়ে তুমুল ঝগড়া।তারপর একটা সমঝোতা হল, যে আগে কথা বলবে সে গাধাকে খাওয়াবে।হোজ্জা বাজিতে জেতার ব্যপারে ডিটারমাইন্ড ছিল।
সেইদিনই, হোজ্জার বিবি বাইরে গেছে, খালি বাসা দেখে একটা চোর ঘরে ঢুকল।হোজ্জা বাসায় ছিল, কিন্তু বাজিতে হেরে যাওয়ার ভয়ে চোরকে কিছু বলল না।চোর নির্বিঘ্নে ঘরের সব কিছু নিয়ে চলে গেল।হোজ্জার স্ত্রী বাসায় ফিরে এসে যখন দেখল সব কিছু খালি, চিৎকার দিয়ে বলল, হায় আল্লা! কি হইছে?
হোজ্জা খুশিতে লাফিয়ে উঠল, আমি জিতছি বাজিতে, এখন তোমারেই গাধাকে খাওয়ান লাগবে।
----------------------------------------------
 বিবির পিড়াপিড়িতে নাসিরুদ্দিন হোজ্জা একটা গরু কিনল।কিন্তু গরু ও গাধার জন্য গোয়াল ঘরে পর্যাপ্ত যায়গা না থাকায়, একটা ঘুমালে আরেকটাকে দাড়িয়ে থাকতে হতো।প্রিয় গাধার এই দুরবস্থা দেখে হোজ্জা একদিন খোদার কাছে প্রার্থনা করছে:
হে আল্লাহ, দয়া করে গরুটাকে মেরে ফেল যাতে আমার গাধাটা একটু আরাম করে ঘুমাইতে পারে
পরদিন সকালে সে গোয়াল ঘরে গিয়ে দেখে যে গাধাটা মরে পরে আছে।প্রানপ্রিয় গাধার মৃত্যুতে দুঃখিত ও হতাশ হয়ে হোজ্জা বিরস বদনে আকাশের দিকে তাকায়ে বলল:
কোন অভিযোগ করবনা, খোদা, কিন্তু তুমি এতদিন ধরে সারা দুনিয়ার মালিক হয়েও, কোনটা গরু কোনটা গাধা এইটা চিনলানা!
-------------------------------------------
রাজার মেজাজ খারাপ।রাজপ্রাসাদ থেকে বেরিয়ে শিকারে যাওয়ার পথে হোজ্জা সামনে পড়ে গেলেন।
শিকারে যাওয়ার পথে হোজ্জার সামনে পড়ে যাওয়াটা আমার ভাগ্যের জন্য খারাপ, প্রহরীদের রাগত গলায় বললেন রাজা।আমার দিকে ওকে তাকাতে দিয়ো না-চাবুকপেটা করে ওকে পথ থেকে সরিয়ে দাও।
প্রহরীরা তা-ই করল।
শিকার কিন্তু ভালোই হলো।
রাজা হোজ্জাকে ডেকে পাঠালেন।
আমি সত্যি দুঃখিত, হোজ্জা।ভেবেছিলাম তুমি অশুভ।কিন্তু তুমি তা নও।
আপনি ভেবেছিলেন আমি অশুভ!হোজ্জা বললেন।আপনি আমাকে দেখার পর ভালো শিকার করেছেন।আর আমি আপনাকে দেখে চাবুকপেটা খেয়েছি।কে যে কার অশুভ, বুঝলাম না।
----------------------------------------------
 একদিন হোজ্জা তার প্রিয় গাধার পিঠে লবণ বোঝাই করে বাজারের দিকে রওনা দিলেন। পথে একটা নদী পড়ল।গাধাসহ নদী পার হলেন।কিন্তু নদীর পানিতে লবণ গলে একাকার।পণ্য হারিয়ে হোজ্জা বিরক্ত।গাধা তো মহা খুশি বোঝা থেকে বেঁচে গিয়ে।
এর পরেরবারও হোজ্জা ওই পথ দিয়ে গেলেন, তবে এবার তুলা বোঝাই করে।গাধা যখন নদী পার হলো তখন তুলা ভিজে ওজন বেড়ে গেল।গাধা ওজনদার মাল নিয়ে টলমল পায়ে এগিয়ে যেতে লাগল।হাহ্! হোজ্জা চেঁচিয়ে বললেন, কেমন জব্দ! ভেবেছিলি প্রতিবার পানি দিয়ে গেলে পিঠের ওপরের মালের ওজন কমে যাবে, তাই না?
-------------------------------------------
কাজী থাকাকালীন একদা নিজের কক্ষে বসে কাজ করছেন হোজ্জা। এমন সময় এক প্রতিবেশি এসে বললেন, “আচ্ছা, হোজ্জা, একজনের গরু যদি আরেকজনের গরু মেরে ফেলে, এর বিধান কী? প্রথম গরুর মালিক কি এতে দায়ী হবে?”
“এটা আসলে নির্ভর করে…।”
“আচ্ছা, তাহলে খুলেই বলি, আপনার গরুটা আমার একটা গরুকে মেরে ফেলেছে।”
“ওহ! সবাই জানে একটা গরু কখনো মানুষের মতো চিন্তা করতে পারে না, তাই গরুর কোনো বিচার হতে পারে না, আর এর মানে হচ্ছে, গরুর মালিকও দায়ী হতে পারেন না।”
“আমি আসলে একটা ভুল করেছি, হোজ্জা। আমি বলতে চাচ্ছিলাম আমার গরুটা আপনার গরুকে মেরে ফেলেছে।”
নাসিরুদ্দীন কয়েক মুহূর্ত চিন্তা করেন। তারপর বলেন, “একটু গভীরভাবে চিন্তা করে দেখলাম, বিষয়টা আসলে প্রথমে যেরকম ভেবেছিলাম, অতটা সহজ নয়।”
তারপর কেরাণীর দিকে ফিরে নির্দেশ দিলেন, “তোমার পেছনে বইয়ের তাক থেকে মোটা বইটা পেড়ে নিয়ে আস তো।”